এই গল্পটা ৯০ এর দশকের শেষের এবং ২০০০ এর শুরুর বছর গুলোর ঘটনা। তখন প্রায় কলকাতার সব বাড়িতেই কেবল কানেকশন এসে গেছে। যাদের বয়স ১৪-১৫ তাদের খুব আনন্দ। কারণ রাতের বেলায় কেবল টিভিতে নীল ছবি দেয়। এই গল্পটা দুটো ছেলের যারা তখন বড় হচ্ছে। এবং বাকিদের মতন নীল ছবি দেখতে চায়। কিন্তু বাবা-মা নিজেদের ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঘরের ছেলেদের ঘুমাতে পাঠায়। তাই নীল ছবি দেখা কোনও ভাবেই সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
কিন্তু এই নিয়মের ব্যাতিক্রম হত যখন ইন্ডিয়ার ক্রিকেট টিম ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে যেত। খেলা শুরু হত সন্ধ্যে বেলায় অ্যান্ড মাঝরাত পর্যন্ত চলত। ছেলেদের কাছে এই ছিল সুবর্ণ সুযোগ নীল ছবি দেখার। এই রকমই একটি ঘটনা এখন বলতে চলেছি।
রোহিত এবং শুভজিতের পাশাপাশি বাড়ি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভারতের খেলতে যাওয়ার পর থেকেই ওরা ঠিক করে নেয় যে নীল ছবি দেখবে। রোহিতের বাড়িতে রঙিন টিভি এবং তাতে রিমোট কন্ট্রোল ছিল। শুভজিতের বাড়ির টিভিটি ছিল সাদাকালো এবং তাতে নব ঘুরিয়ে চ্যানেল পাল্টাতে হত। তাই একবার চ্যানেল পাল্টে নীল ছবি দেখতে শুরু করলে তাকে সাবধানে থাকতে হত যাতে বাবা-মায়ের চলে আসলে দ্রুত চ্যানেল পালটে ফেলতে পারে। তাছাড়া নব ঘুরিয়ে চ্যানেল পাল্টানো সময়-সাপেক্ষ ব্যাপার। আর মা-বাবা যদি চ্যানেল পাল্টাতে দেখে নেন তাহলে বুঝে যাবে সে খেলা না দেখে অন্য কিছু একটা দেখছিল। কিন্তু এই কাজটি ভীষণই সুক্ষ এবং একবার নীল ছবি দেখতে বসলে আশেপাশে কি হচ্ছে বা কে আসছে যাচ্ছে তার খেয়াল থাকেনা। এর সঙ্গে আরও একটা জিনিস জেনে রাখা ভাল যে প্রতিরাতেই যে নীল ছবি সম্প্রচারিত হত তা নয়। মাঝে মাঝে দেখাত এবং হঠাৎ করেই লোকাল কেবলে শুরু হয়ে যেত। তাই শুভজিতের পক্ষে জানাটা একটু শক্ত ছিল কখন নীল ছবি শুরু হবে। কিন্তু রোহিতের কাছে রিমোট কন্ট্রোল থাকার জন্য সে চ্যানেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে নিতে পারত কোথায় কি হচ্ছে।
আইডিয়াটা শুভজিতের মাথা থেকেই বেরোয়। শুভজিতের যে ঘরে টিভি ছিল সেখান থেকে রোহিতের ঘরের জানলা দেখা যেত। শুভজিত ফন্দি আঁটে যখনই নীল ছবি শুরু হবে তখনই রোহিত নিজের ঘরের লাইট জ্বেলে দেবে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে পুরো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর জুড়ে।
No comments:
Post a Comment